শিশুদের সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার টিপস
প্রিয় পাঠক, আপনি কি শিশুদের সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার টিপস জানতে চান? আপনার
শিশুর ভবিষ্যৎ নিয়ে বেশ চিন্তিত? তাহলে আজকের এই পোস্টটি আপনার জন্য। কারণ এই
পোস্টে শিশুদের সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার টিপস রয়েছে। এছাড়াও শিশুদের সাথে
সুন্দর সময় কাটানোর টিপস ও শিশুদের মন ভালো করা টিপস জানতে পারবেন।সবশেষে শিশুদের নিয়ে অভিভাবক দের জন্য গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দেওয়া রয়েছে।
আজকাল শিশুদের নিয়ে অভিভাবক দের চিন্তার শেষ নেই। তাই আপনার চিন্তা দূর করতে
মনোযোগ সহকারে পুরো পোস্টটি পড়তে থাকুন। শিশু ভবিষ্যৎ নিয়ে আপনার সকল সমস্যার
সমাধান পাবেন এই পোস্টে। আশা করছি আপনি এই পোস্টটি পড়ে বেশ উপকৃত হবেন।
পোষ্ট সূচিপত্রঃ শিশুদের সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার টিপস
ভুমিকা
আপনার ছোট্ট একটু উৎসাহ শিশুর জন্য অনেকটা ভালোলাগা তৈরি করতে পারে। আর এই
ভালোলাগার সুন্দর মুহূর্ত গুলো শিশুর মেধা বিকশিত হতে সাহায্য করবে। মনে রাখবেন
একটি শিশু জন্মের পর থেকে পাঁচ-ছয় বছর পর্যন্ত শিশুটিকে যা শেখাবেন কিংবা যা
শিখবে সেটাই সেই শিশুর ভবিষ্যৎ নির্ভর করে।
তাই শিশুর সাথে বাবা মায়ের বন্ধুত্ব গড়ে তুলতে হবে। এছাড়াও আপনার শিশুকে খুবই
অল্প বয়স থেকে বাসায় পড়তে অভ্যস্ত করুন । এতে করে শিশুকে বিদ্যালয়ে ভর্তি
করলে কোন প্রকার দ্বিধাবোধ করবে না। অভিভাবকরা সারাদিনে যতই ব্যস্ত থাকুন না কেন
ছোট্ট শিশুকে অন্ততপক্ষে ২০ মিনিট পড়াশোনার জন্য সময় দিন।
দেখবেন বাচ্চারা বিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর পড়াশোনার দিক থেকে এগিয়ে থাকে।
আজকের এই পোস্টে শিশুদের সাথে সুন্দর সময় কাটানোর কিছু কার্যকরী পদ্ধতি নিয়ে আজকে
আমরা কথা বলব। চলুন জেনে নেই পদ্ধতিগুলো, যার সাহায্যে আপনি গড়ে তুলতে পারেন
আপনার শিশুর সুন্দর ভবিষ্যৎ।
শিশুদের সাথে সুন্দর সময় কাটানোর টিপস
- সারাদিনে যতই বাস্ত থাকুন যতটুকু সময় বাচ্চার সাথে থাকবেন সঠিক ব্যবহার করুন। যখনি বাচ্চার মনে হয় সে আপনাকে নিজের করে পাচ্ছেনা তখনি সে অকারনে কান্না বা জিদ ধরবে। বাচ্চার এটা আপনার মনোযোগ আকর্ষণ করার চেষ্টা। তাই বাচ্চার সাথে সুন্দর সময় কাটানো তার মেধা বিকাশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।ঘুমানোর আগে কিছুটা সময় বাচ্চার সাথে সুন্দর সময় কাটান।
- বাচ্চাকে গান গেঁয়ে বা প্রিয় গল্প বলে ঘুম পাড়ান। এতে বাচ্চা শান্ত থাকবে এবং খুব সহজেই ঘুমিয়ে যাবে। চেষ্টা করবেন ঘুমানোর ঘণ্টা খানিক আগে টেলিভিশন বন্ধ রাখা। এতে করে বাচ্চাকে ঘুম দেওয়া সহজ হয়ে যায়। বাচ্চা ঘুমালে পরিবারের অন্য সদস্য জেনো কথা না বলে বা উচ্চ আওয়াজ না করে সেদিকে লক্ষ্য রাখবেন।
- আপনার বাচ্চার বাল্যকাল সময়টুকু আপনার সমস্ত বড়োমানুষি দূর করে আপনার বাচ্চার বন্ধু হয়ে উঠুন। মন খুলে বাচ্চামি করুন। এতে করে আপনার বাচ্চা অসম্ভব কিছু সুন্দর মুহূর্ত উপভোগ করতে পারবে। সাথে সাথে বাচ্চার মানসিক বিকাশে বেশ লাভবান হবে।
শিশুদের সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার টিপস
- বাচ্চাকে নিয়ে কিছু সময় বাইরে থেকে ঘুরে আসুন। কিছুটা সময় তার হাত ধরে হাঁটুন, গল্প করুন। দেখবেন এই অল্প সময়টুকু বাচ্চার উপরে কতটা ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে। তার আচরনেই আপনি অনুভব করতে পারবেন।
- বাচ্চাকে বই পরে সুনান। এতে বাচ্চা অনেক কিছু শিখতে পারবে। বাচ্চার জন্য এমন বই নিন যাতে রঙ আর ছবি থাকে। পড়ার সাথে সাথে বাচ্চাকে বই এর বিভিন্ন রঙ এবং ছবির সাথে পরিচয় করিয়ে দিন। এর সাথেও কিছু প্রশ্নও করুন এবং উত্তরের তারিফ করুন। দেখবেন বাচ্চার পড়াশুনার প্রতি আগ্রহ জাগবে।
- অনেক সময় বাচ্চারা বিরক্ত করবে বলে বা বাস্ততার কারনে টিভির রিমোট টা বাচ্চার হাতে ছেড়ে চলে যায়। এমনটা করা একদম চলবে না। বাচ্চার জন্য কোনও উপযোগী মুভি চালিয়ে দিয়ে আপনার বাচ্চাকে সাথে নিয়ে টেলিভিশন দেখুন।
- বাচ্চার মতামত কে গুরুত্ব দিন। আমরা অনেক সময়ই ভুল করে থাকি।মনে করি ও তো বাচ্চা কি বুঝবে কিছুই বোঝে না। এ ধরনের মন্তব্য ওদের সামনে কখনই করা যাবেনা। এছারাও ২ থেকে ৫ বছরের বাচ্চাদের নিয়ে গুরুতর একটি সমস্যা হলও বাচ্চা কথা শোনেনা । তাই বাচ্চাদের সাথে বন্ধুত্ব গড়ে তুলুন। আপনার বাচ্চাকে পরিনিত মানুষ হিসেবে দেখুন।
- বাচ্চাদের সমস্যার কথা মন দিয়ে শুনুন। তুচ্ছ মনে হলেও আগ্রহ নিয়ে শুনুন। নিজেদের আচরন ঠিক রাখুন। কারন সেখানেই লুকিয়ে থাকে বড় বড় সমস্যার বিজ। আর এই বয়স থেকেই বাচ্চারা অনুকরন করতে শিখে। তাই পারিবারিক সমস্যা গুলো বাচ্চাদের থেকে আড়ালে সমাধান করার চেষ্টা করুন।
- বাচ্চাদের খাবার টেবিলে বসে খাওয়ান। বাড়ি ঘুরে বা টিভি দেখিয়ে বাচ্চাদের খাওয়ানোর অভ্যাস করবেন না। বাচ্চাদের একদম শৈশব থেকেই যেসব সমস্যা সৃষ্টি হয় তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে বাচ্চাদের খাবারে অনীহা। তাই বাচ্চাকে তার মতো খেতে দিন। বাড়ির তৈরি নানা রকম সুস্বাদু খাবার দিন, উপস্থাপন করুন ভিন্নভাবে, আনুন আকর্ষণীয়তা। এতে করে বাচ্চার খাবারে অনীহা দূর হয়ে যাবে।
- বাচ্চার জীবনের সুন্দর মুহূর্ত গুলো ধরে রাখার চেষ্টা করুন। হতে পারে সেইটা ছবি তুলে সৃতিচারণ হিসেবেও রাখতে পারেন। কোনো এক সময় এ ছবি গুলো হয়ে উঠতে পারে আরও সুন্দর।
- আজকের শিশুদের হাতেই আগামীর ভবিষ্যৎ। মনে রাখবেন আপনি যেসব আনন্দ বা সুন্দর মুহূর্ত থেকে বঞ্চিত হয়েছিলেন সে গুলো থেকে আপনার সন্তান যেন বঞ্চিত না হয়। বাস্তবতার নিরিখে আপনিই নিতে পারেন আপনার সন্তানের সঠিক যত্ন। তাই সিদ্ধান্ত নিতে শেখান। সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিবেন না। ভালও কাজে উৎসাহ দিন।
- বাচ্চাদের সাহস দিন। যে জিনিস বাচ্চারা ভয় পায় সেটা নিয়ে আলোচনা বা হাসা হাসি করবেন না। মনে রাখবেন যুক্তি দিয়ে বাচ্চাদের ভয় কাটানো যায় না।
- বাচ্চাদের অতিরিক্ত শাসন করবেন না। অতিরিক্ত শাসন থেকে কখনও যেনও সন্তান কষ্ট না পায় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। অন্যদের সামনে বকাবকি করবেন না। বাবা-মা একে অপরকে শ্রদ্ধা করবেন। এতে আপনার শিশুও শ্রদ্ধা বোধ শিখবে।
- বাচ্চাদের যখন স্কুলে ভর্তি করবেন তখন পরিবেশ সম্পর্কে সচেতন থাকুন। বাচ্চারা স্কুলে ভর্তি হওয়ার সময় অস্বস্তি বোধ করে। সেক্ষেত্রে ভয় কাটাতে ভয় দেখাবেন না। কাটা দিয়ে সব সময় কাটা তোলা যায়না।
শিশুদের মন ভালো করার টিপস
সারাদিনে অন্তত পক্ষে একটা সময় পরিবারের সবাই এক সাথে সময় কাটান যেমন হতে পারে
সকালে নাস্তার সময় বা রাতে খাওয়ার টেবিলে। খেতে খেতে সারাদিন কার কেমন কাটল তা
নিয়ে আলোচনা করুন। এছাড়াও খাবারের স্বাদ উপকরন রঙ বা রেসিপি নিয়েও আলোচনা করা
যায়। এতে বাচ্চাদের মন মানসিকতা ভাল হবে। বাচ্চা সুসম্পন্ন ভাবে বেড়ে উঠবে।
সবশেষে কিছু পরামর্শ
শিশুরা কাদা মাটি হয়ে জন্মায়। তাকে যেমন সুন্দর করে গড়ে তুলবেন তেমনি সুন্দর
হবে তার ভবিষ্যৎ। মানুষের মত মানুষ হিসেবে গড়ে তোলা একটু কষ্টকর হয়ে যাবে তবে
অসম্ভব বলতে কিছু নেই। চাইলেই সব সম্ভব। কিছু কিছু বাবা মায়েরা সন্তানের যত্নে
খানিকটা ভাটা পড়ে। এটা হতেও পারে দ্বিতীয় বাচ্চার পর প্রথম বাচ্চার উপরে। এমনটা
করা মোটেও চলবে না।
আরও পড়ুনঃ জিন জাতি কাকে বলে? জিন জাতি কোথায় থাকে?
এতে শিশুর মন ভেঙে যায়। শিশু নিজেকে একাকী বোধ করে। অনেকেই আত্মবিশ্বাস ধরে
রাখতে পারে না। তাই পরিবারের স্বাভাবিক পরিবেশ বজায় রাখুন, সন্তানদের ভালবাসুন,
সময় দিন। এতে করে আপনার সন্তান উপহার স্বরূপ একটি সুন্দর ভবিষ্যৎ পাবে। আর আপনিও
অভিভাবক হিসেবে শিশুর ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তা মুক্ত থাকবেন।