পানির উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানুন
প্রিয় পাঠক, আপনি কি পানির উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানতে চান? সঠিক নিয়মে পানি পান করা নিয়ে চিন্তিত? তাহলে এই পোস্টটি আপনার জন্য। কারণ এই পোস্টে পানির উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানানো হয়েছে। শুধুই পানির উপকারিতা ও অপকারিতা নয় আরো রয়েছে পানি
খাওয়ার নিয়ম এবং পানি নিয়ে নানা অজানা তথ্য
সম্পর্কে বিস্তারিত জানানো হয়েছে।
পানি নিয়ে সকল সমস্যার সমাধান পেয়ে যাবেন এই পোস্টে এবং বিভিন্ন রোগ মুক্ত থাকবেন। সবশেষ লেখকের বিশেষ মন্তব্য পেশ করা হয়েছে। তাই মনোযোগ সহকারে পুরো পোস্টটি পড়তে থাকুন। আশা করছি আপনার এই পোস্টটি পড়ে ভালো লাগবে এবং বেশ উপকৃত হবেন।
পোস্ট সূচিপত্রঃ পানির উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানুন
- ভুমিকা
- বিশুদ্ধ পানির উপকারিতা
- বেশি পানি পান করার উপকারিতা
- পানির উপকারিতা
- অতিরিক্ত পানি পানের অপকারিতা
- সকালে খালি পেটে পানি খাওয়ার উপকারিতা
- লেখকের মন্তব্য
ভুমিকা
পানির যেমন উপকারিতা রয়েছে তেমন অপকারিতা ও রয়েছে। আমরা সকলেই জানি যে,পানির অপর নাম জীবন। ঠিক তার উল্টো দিকে পানির অপব্যবহার করলে পানির অপর নাম মরণও হতে পারে। আপনি অবশ্যই পানি পান করবেন তবে তা বুঝে শুনে পান করতে হবে। না হলে তার ভয়াবহ রূপ নিবে আপনার শরীরে।
তাই পানির উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানা অত্যন্ত জরুরী। ছোটবেলা থেকে পড়ে এসেছি পানির অপর নাম জীবন। মানুষ যেমন মেরুদন্ড ছাড়া অচল হয়ে পড়ে ঠিক তেমনি পানি ছাড়া মানুষের জীবন যাপন করা অচল হয়ে যাবে। আর এতেই প্রমাণিত হয় যে, দৈনন্দিন
জীবনে সুস্থ থাকতে পানি আমাদের জন্য কতটা প্রয়োজন।
স্বাভাবিক ভাবে শরীরের
বিভিন্ন অঙ্গের কার্যকারিতার জন্য পানি অপরিহার্য। আর তাই আমাদের শরীরে ৭০ ভাগই
পানি দিয়ে গঠিত। পানি আমাদের শরীরে এক রকম প্রাকৃতিক ঔষুধ হিসেবে কাজ করে থাকে।
আমরা এটিও জানি যে, প্রস্রাবের মাধ্যমে শরীর থেকে সমস্ত বিষাক্ত পদার্থ তরল
আকারে বের হয়ে আসে।
তার জন্য পানি খাওয়া শরীরের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজন। সঠিক নিয়মে পানি পান
করলে, অতিরিক্ত ওজন, হার্টের রোগ, বাতের ব্যথা, মাথা ব্যথা, শরীরে বিভিন্ন
অঙ্গে অনাকাঙ্ক্ষিত ব্যথা বা যন্ত্রণা, এ্যাজমা, গ্যাস্ট্রিক, ডায়াবেটিস,
ডায়রিয়া, বমি, ক্যান্সার, কিডনি রোগ, নাক-কান ও গলার জটিল রোগ, মূত্র নালীতে
রোগ, চক্ষু সমস্যা, মস্তিষ্কের সমস্যা ইত্যাদি রোগ মুক্ত থাকবেন।
এছাড়া শরীরের প্রতিটি অঙ্গে পানির একটি আদর্শ পরিমাপ রয়েছে। শরীরের অঙ্গ প্রত্যঙ্গের পানি ভাগের তালিকা নিম্নে দেওয়া হল :
- মস্তিষ্কে পানির ভাগ রয়েছে ৭৪%
- চোখে পানির ভাগ রয়েছে ৮০%
- পেসিতে পানির ভাগ রয়েছে ৭৫%
- রক্তে পানির ভাগ রয়েছে ৮৩%
- হারে পানির ভাগ রয়েছে ২২%
- পুরো শরীরে পানির ভাগ রয়েছে ৭২%
- সুতরাং, আমাদের শরীরে তিন ভাগই পানি রয়েছে।
বিশুদ্ধ পানির উপকারিতা
বিশেষত আমরা ক্লান্তি দূর করতে পানি পান করে থাকি। শরীরের রক্ত সঞ্চালন ও
সরবরাহ বৃদ্ধি করতে পানির প্রয়োজন । তার কারণ হচ্ছে পানি রক্তে ও কোষে বিভিন্ন
রকম পুষ্টি উপাদান সরবরাহ করে। তাই শুধু পানি পান করলে তৃষ্ণায় মেটে না এর
পাশাপাশি শরীরের পানি শূন্যতাও দূর হয়ে যায়।
এজন্য শরীর সুস্থ রাখতে আমাদের
খাবার তালিকায় পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশুদ্ধ পানি রাখতে হবে। কষ্টকর হলেও খাবার
ছাড়া জীবন ধারণ করা যায় কিন্তু পানি ছাড়া মোটেও জীবন ধারণ করা সম্ভব না। আর হ্যাঁ বিশুদ্ধ পানি পান করাও এক ধরনের চিকিৎসার মধ্যে পড়ে। তাই
অবশ্যই পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশুদ্ধ পানি পান করা প্রয়োজন।
বেশি পানি পান করার উপকারিতা
আমরা জানি, পানিতে কোন প্রকার ক্যালরি নেই। পেট ভরপুর রাখতে বেশি বেশি পানি পান
করা স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। তবে সেটি ঢক ঢক করে গিলে খেলে চলবে না। অবশ্যই তা
ধীরে সুস্থে খেতে হবে । শুধু পানি নয় জীবনের প্রতিটি কার্যকলাপ প্রক্রিয়া ধীরে সুস্থে সম্পাদন করা ভালো । যাই হোক বেশি বেশি পানি পান করলে বেশি দ্রুত কাজ করে আমাদের
শরীরে ওজন কমাতে।
তাই আজ থেকেই বেশি পরিমাণে পানি পান করতে থাকুন এবং নিজের
শরীরকে সুস্থ রাখুন। তবে অতিরিক্ত বেশি পানি পান করলে শরীরে আদ্রতা ক্ষমতা বেড়ে যায় এবং শারীরিক ভারসাম্যতা একেবারেই নষ্ট করে দেয়। এতে করে রক্তের পরিমাণ যে হারে বাড়তে থাকে তাতে হৃদপিণ্ড থেকে রক্ত নালী পর্যন্ত বাড়তি প্রভাব ফেলে। তাই অবশ্যই বুঝে শুনে পানি পান করবেন।
পানির উপকারিতা
- পানি আমাদের শরীরে স্কিনের বলি রেখা দূর করে। কাজেই সহজে বয়সের ছাপ পড়তে দেয় না।
- কিডনি সচল রাখে এছাড়াও কিডনিতে পাথর হওয়া থেকে বাঁচায়।
- কোষ্ঠ কাঠিন্য কম হয়
- ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়
- চুলের উজ্জ্বলতা বাড়ায়
- ত্বকে টক্সিন জমে না
- শরীরে উচ্চ রক্ত চাপ কমায় এবং রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়
অতিরিক্ত পানি পানের অপকারিতা
- মূত্রাশয়ে ক্যান্সার
- মূত্রত্যাগে সমস্যা
- কোলোরেকটাল ক্যান্সার
- কার্য ক্ষমতা কমে যাওয়া
- হজম সমস্যা
- হৃদযন্ত্রে সমস্যা
- রক্ত সঞ্চালনে বাধাগ্রস্থ
সঠিক ভাবে পানি পান করলে অপকারিতার কিছু নেই তবে অতিরিক্ত পানি পান করলে
মারাত্মক ক্ষতি হয়।
সকালে খালি পেটে পানি খাওয়ার উপকারিতা
সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে অন্ততপক্ষে তিন গ্লাস কুসুম গরম পানি পান করুন। এরপর ১ ঘন্টা খালি পেটে থাকুন। অতঃপর দ্বিতীয় গ্লাসে বা তিন গ্লাসের মধ্যে মাঝের গ্লাসে কিছুটা পরিমাণ লেবুর রস মিশিয়ে খেতে পারেন। এরপর সারা দিনের মধ্যে কখনো শরীর খারাপ বা অসুস্থতা বোধ করলে কিছুক্ষণ পর পর এক গ্লাস কুসুম গরম পানি পান করুন।আপনার শরীর খারাপ করলে সেই সময় এই নিয়ম অনুযায়ী পানি পান করলে আপনি নিজেই পরীক্ষিত হবেন পানি আপনার জন্য কতটা উপকারী। এরপর আপনি যদি সুস্থ থাকেন তবে সারা দিনে সাত থেকে আট গ্লাস পানি পান করতে পারেন স্বাভাবিক ভাবে। এতে কোন ক্ষতিকর দিক নেই।
- ওজন কমানোর জন্য বেশ উপকার হয়
- মাইগ্রেনের সমস্যার সমাধান হয়
- অন্ত্র পরিস্কার করতে সহায়তা করে
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
- কোলন পরিষ্কারের সহায়তা করে
- শরীর থেকে টক্সিন বের করতে সাহায্য করে
- গ্যাস্ট্রিক বা এসিডিটি সমস্যার সমাধান করে
- দূষিত পদার্থ বের করতে সাহায্য করে
- মানব দেহের শক্তি সঞ্চয় করে
- ক্যালোরি কমাতে সাহায্য করে
- ত্বক উজ্জ্বল করে
লেখকের মন্তব্য
উপরিউক্ত লেখা গুলোতে আমরা অবশ্যই পানির উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানতে পেরেছি। শুধু পানির উপকারিতা ও অপকারিতা নয় আরো অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানতে পেরেছি যা আমাদের জীবনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। পরিশেষে আপনাদের উদ্দেশ্যে আমি বলব যে, সঠিক পরিমাণে পানি পান করুন। আপনি অবশ্যই রোগ মুক্ত থাকবেন। তবে চেষ্টা করবেন
পানি যাতে বিশুদ্ধ হয়।
মনে রাখবেন, পানির অপর নাম শুধু জীবনই নয় তা মরণও হতে
পারে। তাই সাবধানতা অবলম্বন করে চলবেন। প্রয়োজনের অতিরিক্ত বা অশুদ্ধ পানি পান
করলে মৃত্যু পর্যন্ত ঘটতে পারে। তাই আমাদের জীবনটি একটি নির্দিষ্ট মাত্রায়
পরিচালনা করব। যাতে আপনার আমার আমাদের সকলের জীবন সুরক্ষিত থাকবে এবং সমস্ত
ক্ষতির হাত থেকে বাঁচাবে।
অবশ্যই মনে রাখবেন, মানব শরীর বাঁচিয়ে রাখার জন্য যেমন অক্সিজেনের প্রয়োজন হয় শরীর সুস্থতা ও সুস্থ জীবন যাত্রার মেরুদন্ডই হচ্ছে পানি। পানি ছাড়া সুস্থ জীবন যাত্রার কথা মনে করাই এক ধরনের বোকামি। তাই বিশুদ্ধ পানির অপর নামই হচ্ছে সুস্থ জীবন।