চুল কালার করার ডিজাইন জেনে নিন
প্রিয় পাঠক, আপনি কি চুল কালার করার ডিজাইন জানতে চান? আপনার চুলে ঠিক কোন কালার
টি মানানসই হবে তা নিয়ে চিন্তিত? তবে আজকের পোস্টটি আপনার জন্য। কারন এই পোস্টে
চুল কালার করার পারফেক্ট ডিজাইন দেওয়া হয়েছে এবং কালার এর নাম ও বিবরণ দেওয়া আছে।
সর্বশেষ কিছু পরামর্শ দেওয়া আছে।
আপনি যদি আপনার চুলে নতুনত্বের ছোঁয়া পেতে চান তাহলে দেরী না করে পুরো পোস্টটি
পড়তে থাকুন। আশা করছি পোস্টটি পড়ে আপনি উপকৃত হবেন।
পোস্ট সূচিপত্র: চুল কালার করার ডিজাইন জেনে নিন
ভূমিকা
হেয়ার স্টাইলে নতুনত্বের পরিচয় আনুন খুব সহজেই। যাদের মধ্যে আধুনিকতা ও
নতুনত্বের ছোঁয়া রয়েছে তাদের বেশির ভাগই হেয়ার স্টাইল এ নতুনত্ব আনতে চুলে
বিভিন্ন কালার করে থাকে। আপনিও কি আধুনিকতার সাথে তাল মিলিয়ে চলতে চান? চুলে
কালার করতে চান? তবে বুঝতে পারছেন না যে আপনার চুলে ঠিক কি রঙ মানাবে, তাই না?
কেউ কেউ পুরো চুলে রঙ করে থাকে আবার কেউ চুলের নির্দিষ্ট কোনো অংশে রঙ করে।
নির্দিষ্ট কোনো অংশে চুল রঙ করাকে চুল হাইলাইট করা বলে। অনেকের চুলের রঙ কালো এবং
চুলের রঙ একটু বাদামী। তাই চুলের সৌন্দর্য বাড়িয়ে নিতে এবং আউট লুক এ নতুনত্ব
আনতে আপনার চুলের জন্য মানানসই কিছু রঙ বেছে নিন।
আরো পড়ুনঃ চুল পড়া বন্ধ করার তেলের নাম জেনে নিন
নিচে হেয়ার স্টাইলে মানানসই কিছু রং দেওয়া হলো:
হেয়ার স্টাইলে মানানসই কিছু কালার
- গোল্ডেন ব্রাউন
- অ্যাশ ব্রাউন
- বিচ ব্রাউন
- অ্যাশ ব্ল্যাক
- ক্যারামেল
- রেড চেরী
- চেস্ট নাট
কালার এর বিবরণঃ
গোল্ডেন ব্রাউন
হেয়ার স্টাইলে ফ্যাশানেবল একটি কালার হচ্ছে গোল্ডেন ব্রাউন। ফ্যাশন প্রেমী
নারীরা এই রঙ টি বেশি পছন্দ করে। যাদের ত্বকের রঙ একটু ফর্সা বা যাদের রঙ একটু
ডার্ক সকলেই ব্যবহার করতে পারেন এই কালার টি। তবে ফর্সা ত্বকে গোল্ডেন ব্রাউন
কালার টি হেয়ার স্টাইলে আরো উজ্জ্বল দেখাবে। হেয়ার কার্ল করা থাকলেও এই কালারটা
দারুন দেখায়। এক কথায় যারা চুল নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট করতে ভালোবাসেন তারা
গোল্ডেন ব্রাউন কালার টি ট্রাই করে দেখতে পারেন।
অ্যাশ ব্রাউন
অ্যাশ ব্রাউন কালার টি ভারতে জনপ্রিয় একটি কালার। হেয়ার স্টাইলে আভিজাত্য এনে
দেয় অ্যাশ ব্রাউন কালার। অনেকেরই ধারণা এই কালার টি চুলে লাগালে বুড়োটে ভাব
দেখায় অথবা বয়সের ছাপ বোঝা যায়। যেহেতু কালার টি অ্যাশ কালারের মধ্যে পড়ে তাই
আপনাদের এমন ধারণা করাই স্বাভাবিক। তবে আপনাদের ধারণাটি একদমই ভুল। এই কালারটা
চুলে ধুপ-ছায়ার মত আলো-আঁধারি রঙ দেয়।
বিচ ব্রাউন
বিচ ব্রাউন কালার টি সমুদ্রের ধূলিকণার মতো। বিশেষ করে কালো চুলের জন্য দারুন
লুক এনে দেয় বিচ ব্রাউন কালার। তাই কালো চুলের অধিকারীরা এই কালার টি ট্রাই করে
দেখতে পারেন।
অ্যাশ ব্ল্যাক
পাকা চুলের অধিকারীদের জন্য এই কালার। কারণ অ্যাশ ব্ল্যাক কালার চুলে এপ্লাই করার
পর যদি কারো সাদা চুল থেকে থাকে তবে সেই চুলটা ঢাকা পড়ে যায় এবং অন্য কেউ দেখে
বুঝতেই পারেনা এটি সাদা চুল। অ্যাশ ব্ল্যাক কালার টি পুরুষ ও মহিলা সবার জন্যই
পারফেক্ট।
ক্যারামেল
ক্যারামেল কালার টি কালো চুলের জন্য বেশ উপযোগী। লম্বা চুল ও শর্ট চুল সব
ক্ষেত্রেই বেশ মানানসই হয় এই কালার টি। গোল্ডেন কালার ও ব্রাউন কালারের মিশ্রণ
হচ্ছে ক্যারামেল। চুলে ক্যারামেল কালার টি এ্যাপ্লাই করার পর দেখবেন দারুন চকচকে
কালো এর মধ্যে সোনালী হাইলাইট ইফেক্ট নিয়ে এসেছে। যা দেখে আপনার খুবই পছন্দসই
হবে। চুলে নতুনত্বের ছোঁয়া পেতে এই ক্যারামেল কালার টি এ্যাপ্লাই করে দেখতে
পারেন।
রেড চেরী
বিশেষত ছোট চুলে এই রেড চেরী কালার টি বেশি মানানসই হয়। এই রেড চেরী কালার টি
চুলে এ্যাপ্লাই করার পর অনেক বেশি কেযার নিতে হবে। তবে আপনার পছন্দের তালিকায় যদি
রেড চেরী কালার টি থাকে তাহলে বেশি কেযার নিতে হবে বলে বাদ দিবেন না। কারণ
এ্যাপ্লাই করার পর ফলাফল টা দেখে সবচেয়ে বেশি খুশি হবেন আপনি নিজেই।
চেস্ট নাট
স্ট্রেইট চুলের জন্য এই কালার টি বেশ উপযোগী। পুরো চুলে লাগালে এই কালার টি বেশি
সুন্দর দেখায়।যাদের চুল স্ট্রেট করা আছে তারা এই কালার টি ট্রাই করে দেখতে
পারেন।
চুলের কালার করার পর শ্যাম্পু করা যাবে কি না?
চুলে কালার করার পর একদমই শ্যাম্পু করবেন না। কারণ শ্যাম্পু করলে রঙ ধুয়ে যায়।
এতে হেয়ার কালার টি স্থায়ী হয় না। হেয়ার কালার প্যাক গুলোতে নানা রকম
কেমিক্যাল ব্যবহৃত হয়। তবে এই কালার প্যাক গুলো ব্যবহারে তেমন কোনো পার্শ্ব
প্রতিক্রিয়া দেখা দেয় না। অন্তত পক্ষে ৩০ মিনিট চুলে রেখে নরমাল পানি দিয়ে চুল
ধুয়ে ফেলবেন। ভালো ফলাফল পাওয়ার জন্য ৪৫ মিনিট রাখতে পারেন।
চুল কালার করার ঘরোয়া উপায়
বাড়িতে বসে ঘরোয়া উপায়ে চুল কালার করলে সময় ও অর্থ অপচয় দুটোই বাঁচে। অনেকেই
পার্লারের কাজ পছন্দ করে না। আবার অনেকেই আছে যাদের পার্লারে গিয়ে ঘন্টার পর
ঘন্টা বসে থাকা ধৈর্য ও সময় দুটোই হাতে নেই। তাদের জন্য ঘরোয়া উপায় গুলো
বেস্ট। এছাড়াও ঘরোয়া উপায় গুলো এ্যাপ্লাই করাতে যারা ঝামেলার বিষয় মনে করেন
তারা কিন্তু এ্যাপ্লাই করার পর এটি পছন্দনীয় হয়ে যাবে আপনার কাছে।
আরো পড়ুনঃ চুল পড়া বন্ধ করার ঘরোয়া উপায় জেনে নিন
কারণ প্রাকৃতিক উপায় গুলোতে একদমই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই বললেই চলে। আপনি যদি
কেমিক্যাল রং ব্যবহার করতে না চান শুধুমাত্র ঘরোয়া উপায় দিয়ে কালার করতে চান
তাহলে নিচে জেনে নিন কালার করার ঘরোয়া উপায় গুলো:
- চা পাতা দিয়ে চুলে অসাধারণ রঙ আনতে পারবেন। ৬ কাপ পানিতে ৪ চামচ চা পাতা ফুটিয়ে ঠান্ডা করে নিন। চুলের শ্যাম্পু করার পর ঠান্ডা করা চা পাতার পানি দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। এরপর চুলটি ১০ থেকে ২০ মিনিট সেভাবে রেখে দিন। তারপর আবার সাধারণ জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এতে চুলে চা পাতার হালকা লালচে ভাব আসবে।
- প্রাকৃতিক উপায়ে চুলের রেড চেরী রং পেতে চান? তবে ৬ কাপ পানিতে ৩ চামচ আখরোট গুড়ো মিশ্রিত করে গরম করুন। এরপর এটি ঠান্ডা করতে সারা রাত রেখে দিন। পরের দিন শ্যাম্পু করার পর ১৫ মিনিটের মতো চুলে লাগিয়ে রেখে ধুয়ে ফেলুন। ভালো ফলাফল পেতে ৩০ মিনিট রাখতে পারেন।
- প্রাকৃতিক উপায়ে চুলে ব্রাউন কালার আনতে চান? তবে এক কাপ জল নিন। এক চামচ লবঙ্গ ও এক চামচ দারচিনি নিয়ে নিন। সবগুলো একসাথে ফুটিয়ে ঠান্ডা করে নিন। ভালো ফলাফল পাওয়ার জন্য একটু সময় নিয়ে ফুটাবেন। এবার শ্যাম্পু করার পর মিশ্রণটি চুলে লাগিয়ে আধা ঘন্টা রাখুন।
লেখক এর মন্তব্য
কেন জানিনা আমার মনে হয় চুলে কালার করলে ত্বকে অনেকটা স্নিগ্ধতার ছোঁয়া পাওয়া
যায়। আমাদের দেখার দৃষ্টিকোণ কে আরো উজ্জ্বল করে তোলে। চুলে যেকোনো কালার
এ্যাপ্লাই করার পর একটু বেশি কেয়ার নিবেন। চুল স্মুথ থাকবে। আর মাঝে মধ্যে একটু
টাচ আপ করবেন কালার টা হাইলাইট করার জন্য।
আরো পড়ুনঃ মাথা ব্যাথা কমানোর ঔষধের নাম জেনে নিন
কেউ যদি প্রাকৃতিক ভাবে চুলে কালার করতে চাই বা চুলে লালচে ব্রাউন কালার আসবে
এমনটা চাই তবে হেনা প্যাক ব্যবহার করলে দেখতে পারে। কারণ হেনা প্যাক চুলে
প্রাকৃতিক ভাবে লালচে ভাব আনে। যা একদমই পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া মুক্ত।