প্রাকৃতিক উপায়ে স্কিন কেয়ার করুন খুব সহজেই

প্রিয় পাঠক, আপনি কি প্রাকৃতিক উপায়ে স্কিন কেয়ার করতে চান? প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে ন্যাচারাল ত্বক পেতে চান অথবা হারানো ত্বক ফিরে পেতে চান? যদি এমনটি হয় তাহলে আজকের এই পোস্টটি আপনার জন্য। কারণ এই পোস্টে প্রাকৃতিক উপায় স্কিন কেয়ার সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। এছাড়া প্রাকৃতিক উপাদানের সমস্ত বিবরণ দেওয়া হয়েছে।
পোস্ট সূচিপত্র:বিস্তারিত জানতে অতি মনোযোগ সহকারে পুরো পোস্টটি পড়তে থাকুন। আশা করছি পুরো পোস্টটি পড়ে আপনার মনে জমে থাকা অজানা প্রশ্নের উত্তর গুলো পেয়ে যাবেন এবং আপনি বেশ উপকৃত হবেন, ধন্যবাদ।   

ত্বকের যত্নে কিছু টিপস


প্রায় সকলেই সৌন্দর্য পিপাসু। ত্বকের যত্নে টিপস পেতে কে না ভালোবাসে। সকলে চাই ত্বক সুন্দর রাখতে। আর সেই ত্বক সুস্থ ও সুন্দর রাখতে অবশ্যই ময়েশ্চারাইজড নিয়মিত করতে হবে। শুধুমাত্র ব্যয়বহুল উন্নতমানের সৌন্দর্য পণ্য সামগ্রী ব্যবহার করলেই যে ত্বক সুন্দর থাকবে এমনটি নয়। প্রাকৃতিক উপাদানের মধ্যে লুকিয়ে রয়েছে ত্বক সুস্থ ও সুন্দর রাখার রহস্য। চলুন নিচে জেনে নেই ত্বকের যত্নে প্রাকৃতিক উপাদানের রহস্য।

প্রাকৃতিক উপায়ে স্কিন কেয়ার


প্রাকৃতিক উপায় স্কিন কেয়ার করলে ত্বক থাকে সুন্দর ও ন্যাচারাল। এতে কোনো প্রকার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই। 


ত্বকের যত্নে কিছু প্রাকৃতিক উপাদান নিচে দেওয়া হলো:

  • নারিকেল তেল
  • অ্যালোভেরা
  • অলিভ অয়েল
  • চকলেট
  • চন্দন
  • মধু
  • বেসন
  • টক দই
  • ডিম
  • শসা
  • টমেটো

প্রাকৃতিক উপাদানের বিবরণ


চলুন নিচে জেনে নেই প্রাকৃতিক উপাদান গুলোর বিবরণ:


নারিকেল তেল

আমরা জানি চুলের যত্নে উপযোগী তেল হচ্ছে নারিকেল তেল। তবে চুলের পাশাপাশি ত্বকের যত্নে যে নারিকেল তেল ব্যবহৃত হয় এটি হয়তো অনেকেই জানেনা। শুষ্ক ত্বকের জন্য উপকারী তেল হচ্ছে নারিকেল তেল। যাদের শুষ্ক ত্বকে ব্রণ আছে তাদের ব্রণ দূর করতে সাহায্য করে।এছাড়াও ত্বক হাইড্রেট করে এবং ত্বকের নানা প্রকার জীবাণু ধ্বংস করতে সাহায্য করে নারিকেল তেল। 

ভালো ফলাফল পেতে নারিকেল তেল ও মধু একসাথে মিশ্রিত করে একটি প্যাক তৈরি করতে পারেন। এটি শীতকালের জন্য বেশ উপযোগী হবে। এর সাথে লেবুর রস দিলে আরো ভালো হয়। তবে না দিলেও সমস্যা নেই।

অ্যালোভেরা

এলোভেরা চুল ও ত্বকের জন্য খুবই উপকারী। অ্যালোভেরা এমন একটি উপাদান যা ময়েশ্চারাইজড করতে অনেক বেশি সাহায্য করে। ভালো ময়েশ্চারাইজার তৈরি করতে নারকেল তেল ও অ্যালোভেরা একসাথে মিশ্রিত করুন। এতে আরো ভালো ফলাফল পাবেন।

অলিভ অয়েল

ত্বক সুস্থ রাখতে অলিভ অয়েল এর ভূমিকা অনেক বেশি। রাতে ঘুমানোর সময় ও প্রতিদিন গোসলের আগে পুরো শরীরে অলিভ অয়েল ম্যাসাজ করলে ত্বক সুস্থ ও সুন্দর থাকে। পুষ্টি ও অক্সিজেনের যোগান দেয় অলিভ অয়েল। এছাড়াও অলিভ অয়েল ত্বকে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট যোগায়। শুষ্ক ত্বকের জন্য বেস্ট ময়েশ্চারাইজার হিসেবে কাজ করে অলিভ অয়েল।

চকলেট

ত্বকের যত্নে চকলেট এর কথা বললে বিষয়টি অনেক হাস্যকর হয়ে যায় তাই না? উপরে যখন চকলেট এর কথা বলেছি তখন হয়তো অনেকের মনেই প্রশ্ন জেগেছে যে ত্বক পরিচর্যার জন্য চকলেটের উপকরণ আবার কেমন ফলাফল দেয়। তবে আজ জেনে নিন নরম, মোলায়েম ও উজ্জ্বল ত্বকের জন্য চকলেট এর কার্যকারিতা অনেক বেশি। 

বিশুদ্ধ চকলেট গলিয়ে ১০ থেকে ১৫ মিনিট মুখে এ্যাপ্লাই করুন। আরো ভালো ফলাফল পেতে ৩ চামচ মধু, ৩ চামচ কর্নফ্লাওয়ার ও তিন চামচ কোকো পাউডার এক সাথে মিশিয়ে একটি প্যাক তৈরি করুন। এটি ত্বকে লাগিয়ে আধা ঘন্টা অপেক্ষা করুন। তারপর কুসুম গরম পানি দিয়ে ত্বক ধুয়ে ফেলুন। তবে হ্যাঁ এই প্যাকটি শুধুমাত্র শুষ্ক ত্বকের জন্য।

চন্দন

রূপচর্চায় আভিজাত্য এনে দেয় চন্দন। বহু যুগ ধরে ত্বকের যত্নে চন্দনের ব্যবহার হয়ে আসছে। ত্বকে টানটান ভাব নিয়ে আসে চন্দন।

মধু

কোমল ত্বকের জন্য মধুর গুরুত্ব অনেক বেশি। বহু যুগ ধরে ত্বকের যত্নে বয়সের ছাপ দূর করতে মধু ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এছাড়াও ত্বকের বিভিন্ন বলিরেখা দূর করে এই মধু। কমলার রস এর সাথে মধু মিশ্রিত করুন। মিশ্রণটি ত্বকে লাগিয়ে ১৫ মিনিট অপেক্ষা করুন। তারপর ত্বক ধুয়ে ফেলুন। এতে ত্বকের রুক্ষতা ভাব দূর হয়।

বেসন

মধুর মতো বেসন ও বলিরেখা দূর করতে সাহায্যকারী উপাদান। শুধু তাই নয় ত্বক পরিষ্কার ঝকঝকে রাখে বেসন। সামান্য পরিমাণ দুধ, মধু ও বেসন একসাথে মিশিয়ে একটি প্যাক তৈরি করুন। এবার এই প্যাকটি ত্বকে লাগান এবং শুকিয়ে গেলে ভেজা তোয়ালে দিয়ে ত্বক মুছে ফেলুন। দেখবেন ত্বক পরিষ্কার হয়ে যাবে এবং ত্বকের আদ্রতা অধিক হারে বৃদ্ধি পাবে।

টক দই

ত্বকের জেল্লা বাড়াতে টক দই খুব ভালো কাজ করে। পরিমাণ মতো মধু ও টক দই মিশিয়ে ত্বকে লাগান। প্রায় আধা ঘন্টা হয়ে আসলে ত্বক ধুয়ে ফেলুন। দেখবেন ত্বকের শুষ্ক ভাব দূর হয়ে গেছে। ত্বক অনেক বেশি নরম ও মোলায়েম হয়ে গেছে।

ডিম

ত্বকের যত্নে ভালো উপাদান হচ্ছে ডিম। সুস্থ ও ন্যাচারাল ত্বক পেতে হলে ত্বকের যত্নের তালিকায় ডিম রাখুন। ডিমের কুসুম, অলিভ অয়েল অথবা ক্যাস্টর অয়েল, লেবুর রস অথবা কমলার রস, মধু ও গোলাপজল একসাথে মিশ্রিত করুন। এবারে মিশ্রণটি ত্বকে লাগিয়ে ১০ থেকে ১৫ মিনিট রাখুন। দেখবেন ত্বকের রুক্ষ ভাব কেটে গেছে। হারানো সতেজ ত্বক ফিরে পাবেন।

শসা

ত্বক সুথিং রাখতে সাহায্য করে শসা। ত্বক ভালো করে ধুয়ে শুকনো তোয়ালে দিয়ে মুছে শসা কুচি করে ত্বকে ম্যাসাজ করুন। এতে ত্বক স্বাস্থ্যজ্জল করবে। এছাড়াও চোখের এরিয়ায় অনেক ডার্ক সার্কেল দেখা দেয়। শসা ব্লেন্ড করে শসার রস ডার্ক সার্কেল এর জায়গায় ব্যবহার করলে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়।

টমেটো

ব্ল্যাক হেডস ও হোয়াইট হেডস দূর করতে টমেটোর ভূমিকা অনেক বেশি। শসার মত একই নিয়মে টমেটো ত্বকে এ্যাপ্লাই করে দেখতে পারেন। এতে ত্বকের সমস্যা দূর করবে এবং ত্বক উজ্জ্বল ও মসৃণ করে তুলবে।

ঘরোয়া টোটকায় কি ত্বকের বয়স ধরে রাখা যায়?


অনেকের মনে জেগে থাকা প্রশ্ন যে, প্রাকৃতিক উপাদান বা ঘরোয়া টোটকা দিয়ে কি ত্বকের বয়স ধরে রাখা যায়? তবে কি বয়সের ছাপ একদমই পড়বে না? আপনাদের ধারণাটি একদমই ভুল নয় তবে বয়সের সাথে সাথে বয়সের ছাপ পড়বে এমনটাই স্বাভাবিক। 


শুধুমাত্র প্রাকৃতিক উপাদান গুলো হারানো ত্বক ফিরিয়ে নিয়ে আসে, ত্বক স্বাস্থ্য উজ্জ্বল রাখে এবং ত্বক মসৃণ ও মোলায়েম রাখে। তাছাড়া কিছু উপাদান ত্বকের ময়েশ্চারাইজার হিসেবে কাজ করে। তবে বয়সের সাথে সাথে বুড়োটে ভাব আসবে এটাই স্বাভাবিক। এটি নিয়ে দুশ্চিন্তার কিছু নেই।

লেখক এর মন্তব্য


উপরের সব উপাদান যে সবার জন্য প্রযোজ্য এমনটি নয়। একেক জনের একেক উপাদানে এলার্জি থাকতে পারে এটাই স্বাভাবিক। তাই বুঝে শুনে ব্যবহার করবেন। যদিওবা প্রাকৃতিক উপাদান গুলোতে খুব বেশি পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই অথবা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই বললেই চলে তবুও বলছি সবচেয়ে ভালো হয় ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী সঠিক পদক্ষেপ নেওয়া। তবে সব সময় চেষ্টা করবেন বাজার জাতীয় দ্রব্য সামগ্রী ব্যবহার না করে ঘরোয়া পদ্ধতিতে প্রাকৃতিক উপায়ে ত্বকে যত্ন নেওয়া। 

কারণ বাজারজাত দ্রব্য সামগ্রী গুলো ক্ষতিকারক উপাদান দিয়ে তৈরি হয়। আর প্রাকৃতিক উপাদান গুলোতে ক্ষতিকারক উপাদান নেই বললেই চলে। তাই আমার দেওয়া এই পরামর্শটি আশা করি আপনার উপকার হবে। আশা করছি উপরে সবগুলো উপাদানের মধ্যে কোনো না কোনো একটি উপাদান আপনার কাজে আসবে। সবশেষে বলতে চাই, পোস্টটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে আপনার মূল্যবান মতামতটি কমেন্ট বক্সে অবশ্যই জানিয়ে দেবেন। 

জিসান স্প্ল্যাশ খুব যত্ন সহকারে আপনাদের সুন্দর কমেন্ট গুলো পড়ে থাকে, ধন্যবাদ। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন