রাজশাহী অঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি জানুন
প্রিয় পাঠক, আপনি কি রাজশাহী অঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির অবনতির ঘটনা জানতে চান? প্রিয় রাজশাহী বাসীরা ভয়াবহ দূর্যোগে কিভাবে আছে এবং কিভাবে সীমাহীন দুর্ভোগ এড়াবে তা নিয়ে আপনার জানার কৌতুহল রয়েছে? যদি তাই হয় তাহলে আজকের এই পোস্টটি আপনার জন্য। কারণ এই পোস্টে রাজশাহী অঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি জানানো হয়েছে।
পোস্ট সূচিপত্র:বিস্তারিত জানতে অতি মনোযোগ সহকারে পুরো পোস্টটি পড়তে থাকুন। আশা করছি পুরো পোস্টটি পড়ে আপনার মনে জমে থাকা অজানা প্রশ্নের উত্তর গুলো পেয়ে যাবেন এবং আপনি বেশ উপকৃত হবেন, ধন্যবাদ।
প্রিয় রাজশাহী
এবার বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ঘটছে রাজশাহীতে। ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়েছেন রাজশাহী বাসী। প্রায় বাগমারা উপজেলার ১৬ টি ইউনিয়ন ও ২ টি পৌর এলাকার পঞ্চাশ হাজার মানুষের বেশি বন্যা পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছে। প্রায় অনেক বছর পর ২০২৩ সালে এই প্রথম বারের মতো রাজশাহী বাসীকে ভুগতে হচ্ছে বন্যা পরিস্থিতিতে। পানি বন্দী হয়ে আছে হাজারো মানুষ।
রাজশাহীতে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি
নিরাপদ আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছে প্রিয় রাজশাহী বাসীরা। বিশুদ্ধ পানি ও খাদ্য সংকটে ভুগছেন রাজশাহী বাসী। সীমাহীন দুর্ভোগে ভুগছেন এ অঞ্চলের খেটে খাওয়া দিন মজুর ও ক্ষেত মজুর। এখন পর্যন্ত খবর পাওয়া গেছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ত্রাণ পায়নি রাজশাহী বাসীরা। যার কারণে খেটে খাওয়া দিন মজুর ও ক্ষেত মজুরেরা অনাহারে ও অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছে।
শুধুমাত্র বন্যার অবনতি এখানেই শেষ নয়। হাজারো মানুষের বাড়ি-ঘর, ফার্নিচার ও রাস্তাঘাট ডুবে গিয়েছে। গ্রাম্য বাড়ি ঘর গুলো তলিয়ে গিয়েছে। যার কারনে মানুষ এখন পর্যন্ত গৃহবন্দী রয়েছে। আর মাটির ঘর গুলোর কথা আর কি বলা যায়। ভেঙে চুরে শেষ হয়ে গেছে বসত বাড়ি গুলো।
বসত বাড়ি গুলো তলিয়ে যাওয়াতে মানুষ কিছুটা উঁচু স্থানে সাময়িক সময়ের জন্য আশ্রয় নিয়েছে। যারা পশু পালন করে তাদের আরো বেশি সমস্যায় পড়তে হয়েছে। বন্যার এই স্যাত স্যাতে দিনে পশু যেনো ঘরে থাকতে আর চাই না। এছাড়াও ভেসে গেছে শত শত সবজি ক্ষেত ও শত শত পুকুরের মাছ।
রাজশাহীতে এইমাত্র তাজা খবর
পানি উন্নয়ন বোর্ সূত্রে জানা গেছে যে, বাগমারা উপজেলার বেশ কয়েকটি ইউনিয়নের অনেক গ্রামের ঘরবাড়ি গুলোতে পানি ঢুকেছে। বেশ কিছুদিন ধরে অতিরিক্ত বৃষ্টি হওয়ায় নতুন নতুন এলাকা গুলো প্লাবিত হয়েছে। কিছু কিছু জন প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে যে, অতি দুর্বিষহ দিন কাটাচ্ছেন এ পানি বন্দী মানুষেরা।
কিছু কিছু ক্ষতিগ্রস্ত বসত বাড়ির মানুষেরা প্রতিবেশীদের কাছে বা উঁচু কোন উঁচু স্থান দেখে আশ্রয় নিয়েছে। আর এটি তো সবারই জানা রাস্তাঘাট ডুবে রয়েছে। স্থানীয় প্রশাসনের কাছে জানা গেছে, বন্যায় দুর্গত লোকজনের প্রতিনিয়ত খোঁজ খবর নিচ্ছে প্রশাসনের লোকজন।
উপজেলার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের বয়ান
- বাগমারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শরীফ আহমেদ জানিয়েছেন যে, বন্যায় প্লাবিত এলাকায় ১৭ মেট্রিক টন চাল বিতরণের প্রস্তুতির কাজ চলছে। এছাড়া পানি দূষিত হওয়ার জন্য উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পানি বিশুদ্ধ করার ট্যাবলেট দেওয়া হয়েছে।
- উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মাসুদুর রহমান জানিয়েছেন যে, চলতি বন্যায় উপজেলা ইউনিয়নের ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা চেয়ারম্যানের কাছে পৌঁছানো হয়েছে। বানভাসিদের সহযোগিতায় খুব দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
- উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রাজীবুর রহমান জানিয়েছেন যে, এবারের বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে কৃষকদের। তাই ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা গুলো পরিদর্শন করা হচ্ছে। তবে ক্ষতির পরিমাণ দিন দিন আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা জানিয়েছেন তিনি।
রাজশাহী অঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতিতে কাঁচা বাজারের দাম
আমরা আগে জেনেছি যে এবারের বন্যায় তলিয়ে গেছে ফসলী জমি। আর এর ভয়াবহ প্রভাব পড়েছে রাজশাহীর কাঁচা বাজারে। প্রতিটি সবজির দাম সর্বোচ্চ ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে গেছে। কোনো কোনো জায়গায় অসাধু ব্যবসায়ীরা ৫০ টাকা পর্যন্ত বাড়িয়ে দিয়েছে।
আবহাওয়া বার্তা ও পূর্বাভাস
আবহাওয়া অফিস, বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছেন যে, পদ্মা, যমুনা ও ব্রক্ষপূত্র নদীর পানি বেড়েই চলেছে এবং আগামী ৭২ ঘন্টা এটি চলমান থাকবে। এছাড়াও উত্তর পূর্বাঞ্চলের প্রধান নদ নদী গুলোতে পানি বেড়েই চলেছে। এটি ও আগামী ২৪ ঘন্টা পর্যন্ত চলমান থাকবে।
সর্বশেষ খবর
বন্যার পানি বৃদ্ধি এখন পর্যন্ত অব্যাহত রয়েছে। যার কারনে এখনো অনেক গ্রাম বন্যায় কবলিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ নিয়ে রাজশাহী বাসী এখন পর্যন্ত আতঙ্ক বিরাজ করছে। বিভিন্ন জায়গায় যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার কারনে নানান মানুষ এর ব্যবসা বানিজ্যের ক্ষতি হচ্ছে।
লেখক এর কথা
আশা করছি প্রিয় রাজশাহী বাসীর এই ভয়াবহ দূর্যোগের কিছুটা অংশ হলেও আপনাদের কাছে তুলে ধরতে পেরেছি। উপরে উল্লেখিত সম্পূর্ন লেখা গুলো পড়ে যদি আপনার ভালো লাগে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট বক্সে আপনার মূল্যবান মতামতটি জানিয়ে যাবেন, ধন্যবাদ।